আন্তর্জাতিক ডেস্ক:ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ইউরেশীয় বিষয়ক চীনা দূত লি হুই। একইসঙ্গে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (২ জুন) বেইজিংয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। খবর আল-জাজিরার।
সংবাদ সম্মেলনে লি বলেন, আমরা যদি সত্যিই যুদ্ধ বন্ধ করতে ও শান্তি অর্জন করতে চাই, তাহলে আমাদের যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করতে হবে। ইউক্রেন সংকটের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা যেভাবে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে, তা সব পক্ষের সামর্থের প্রতিফলন।
যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আলোচনায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে কোনো পক্ষই শান্তি আলোচনার দরজা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে অস্ত্রের বৃহত্তম সরবরাহকারী। গত বছর আক্রমণের পর থেকে দেশটি এ পর্যন্ত ইউক্রেনকে প্রায় তিন হাজার সাতশো কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে। গত মাসে যুক্তরাজ্যও রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও কয়েক ডজন ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অন্যদিকে ইউক্রেনে অস্ত্রের অন্যতম বড় সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে জার্মানি।
এমন পরিস্থিতিতে লি হুই গত মাসে শান্তি আলোচনার কিয়েভ, ওয়ারশ, প্যারিস, বার্লিন, ব্রাসেলস ও মস্কোতে ১২ দিনের সফর করেন। একটি চূড়ান্ত রাজনৈতিক মীমাংসার জন্য পথ খুঁজে বের করতেই লি ওই সফর করেছিলেন বলে জানিয়েছিল চীন।
সে সময় লি বলেছিলেন, সব পক্ষকেই নিজ থেকে আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। পারস্পরিক আস্থা তৈরি করতে হবে। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে, যাতে যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনা শুরু করা যায়। যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের সরকার বলেছে, তারা নিরপেক্ষ এবং মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে চায়। তবে দেশটি রাজনৈতিকভাবে মস্কোকে সমর্থন করেছে।
রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গত মার্চে রাশিয়া সফর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং। তখন তিনি বলেছিলেন, আমাদের সম্পর্ক ‘নতুন যুগে প্রবেশ করেছে।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে চীন নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে বললেও মস্কোর এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা না জানানোয় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। তবে দেশটি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়ে যুদ্ধ বন্ধে সহায়তার চেষ্টা চালাচ্ছে।