অনলাইন ডেস্ক: রাজধানীর মহাখালীতে আলোচিত চিকিৎসক নেতা ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই হত্যার মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে চারজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক রেজাউল করিম এ রায় ঘোষণা করেন। সাজা ঘোষণার সময় কারাগার থেকে হাজির করা ১০ আসামিকেই আদালতে উপস্থিত রাখা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানান প্রসিকিউটর মোয়াজ্জেম হোসেন।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—কামরুল হাসান অরুণ, মাসুম মিন্টু, সাইদ ব্যাপারী, বকুল মিয়া ও সাইদ মিজি। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—আবুল কালাম, সাইদুল, ফয়সাল ও পেদা মাসুম। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে রফিকুল ইসলামকে।
ঘটনাটি ঘটে ২০১২ সালের ২৩ আগস্ট রাতে। সেদিন মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আবাসিক এলাকায় নিজ বাসায় খুন হন ডা. নিতাই। হত্যাকাণ্ডের সময় বাসায় উপস্থিত ছিলেন শুধু তার বৃদ্ধা মা, আর স্ত্রী লাকী চৌধুরী অবস্থান করছিলেন চট্টগ্রামে। পরদিন নিহতের বাবা তড়িৎ কান্তি দত্ত বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে, চুরির উদ্দেশ্যে আসামিরা ওই বাসায় প্রবেশ করেছিল। চুরি ধরা পড়ে যাওয়ায় পরিকল্পিতভাবেই নিতাইকে হত্যা করা হয়। পরে আসামিরা বাসা থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়।
২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গাজী আতাউর রহমান ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ওই বছরের ২২ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ায় মোট ২৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয় এবং আসামিদের মধ্য থেকে কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।
প্রসঙ্গত, এ মামলার আসামিদের মধ্যে কয়েকজনকে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। তবে সেই মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।
দীর্ঘ ১৩ বছর পর অবশেষে এই আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা হলো, যেখানে আদালত সব আসামিকেই দোষী সাব্যস্ত করেছেন।