নিষেধাজ্ঞার শেষ মুহূর্তে লাখ লাখ জেলে নিচ্ছেন প্রস্তুতি

অনলাইন ডেস্ক : নিষেধাজ্ঞার শেষ মুহূর্তে লাখ লাখ জেলে ইলিশ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রবিববার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে মা ইলিশ রক্ষায় নদী ও সাগরে চলা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেই মাছ শিকারে নেমে পড়বেন তারা।

জেলেরা বলছেন, বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়ে এবার ভারতের জেলেদের অনুপ্রবেশের খবর তেমন শোনা যায়নি। ফলে নদী ও সাগরে নেমে আশানুরূপ মাছ পাওয়ার আশা জেলেদের। আর বিশেষজ্ঞদের মতে-প্রজননের পরে এখন ইলিশের ডিম রক্ষা করার পাশাপাশি ডিম থেকে হওয়া জাটকাও রক্ষা করা গেলে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সরকারের উদ্দেশ্যও সফল হবে। ঘাটে জেলেদের তোড়জোড় বেড়েছে। জেলে পল্লীতে এভাবেই কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জেলেরা। তিন সপ্তাহ কর্মহীন সময় কাটিয়ে এখন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর হাজার হাজার জেলে নদী ও সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এই উপজেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য ঘাট চরমোন্তাজ স্লুইস ঘাট এলাকায় সারি সারি করে রাখা ট্রলারগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে।

জেলেরা বলছেন, টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় তাদের অনেকেই ধারদেনায় জড়িয়েছেন। টানাপোড়নে চলেছে দিন। সংসারের খরচ মেটানোও কারো কারো জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছিল। কারণ তালিকাভুক্ত না হওয়ায় নিষেধাজ্ঞাকালীন সরকারি খাদ্য সহায়তার ২৫ কেজি চাল সবার ভাগ্যে জোটেনি। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদী ও সাগরে নেমে আশানুরূপ মাছ পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন জেলেরা। বিগত নিষেধাজ্ঞাগুলোতে যেভাবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের জেলেরা বাংলাদেশী পানিসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকার করেছিল, এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সেভাবে ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশের খবর শোনা যায়নি। তাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে কাক্সিক্ষত মাছ জালে উঠতে পারে।

মায়ের দোয়া ফিশিংয়ের মাঝি ইউসুফ বলেন, আমি সাত থেকে আট বছর পর্যন্ত জেলে হিসেবে কাজ করছি। কিন্তু সরকারি প্রণোদনার তালিকায় আমার নাম নেই। যারা অন্য পেশায় জড়িত দেখেছি তারা সরকারি চাল পেয়েছে। তাই প্রণোদনার তালিকায় প্রকৃত জেলেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। ট্রলারে জালসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম তুলছি। গতকাল আমাদের ট্রলারের রং করার কাজ শেষ হয়েছে। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ একোয়াকালচার ও মেরিন সায়েন্স অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রজননের সময় সাগরের নোনা পানি থেকে নদীর মিঠা পানিতে এসে মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। এখন এই ডিম রক্ষা করার পাশাপাশি ডিম থেকে হওয়া জাটকাও রক্ষা করা গেলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। ইলিশে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ। উল্লেখ্য, মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আজ (রোববার) রাত ১২টায় শেষ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *