অনলাইন ডেস্ক: বৈশ্বিক সংকটের এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফর সহজ করবে এলএনজি সংক্রান্ত দরকষাকষি। আর এতে জ্বালানি ইস্যুতে ইতিবাচক ফল আসতে পারে। সম্প্রতি সময় সংবাদকে ফোনে এ কথাগুলো বলেছেন আন্তর্জাতিক জ্বালানি পরামর্শক প্রকৌশলী সালেক সুফি।
প্রধানমন্ত্রীর এ কাতার সফরে গুরুত্ব পাচ্ছে জ্বালানি ইস্যুটি। এবারের সফরে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুও সাক্ষাৎ করবেন তার সঙ্গে। উভয় বৈঠকে গুরুত্ব পাবে দেশটি থেকে এলএনজি সরবরাহের পরিমাণ আরও বাড়ানোর বিষয়টি।
দেশে জ্বালানি সরবরাহের উল্লেখ্যযোগ্য একটি অংশই মেটানো হচ্ছে এলএনজির মাধ্যমে। আর এটি করা হচ্ছে মূলত দুটি উপায়ে। একটি কাতার ও ওমানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করে; অপরটি স্পট মার্কেট থেকে।
কাতারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এরই মধ্যে বছরে ১.৮ থেকে ২.৫ মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি করছে বাংলাদেশ। সংকট কাটাতে দেশটি থেকে এলএনজি সরবরাহ আরও বাড়াতে চায় সরকারের জ্বালানি বিভাগ। ২০২৫ কিংবা ২০২৬ সাল থেকে বার্ষিক আরও এক থেকে দেড় মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি বাড়াতে কাতারের সঙ্গে চলছে দরকষাকষি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ’তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে’ অংশ নিতে দেশটির আমিরের আমন্ত্রণে দুমাসের ব্যবধানে আবারও দোহায় অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী।
তার এ সফরে অবধারিতভাবেই গুরুত্ব পাচ্ছে জ্বালানি ইস্যু। সফরের দ্বিতীয় দিনে আজ (মঙ্গলবার, ২৩ মে) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী। পরদিন কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হওয়ার কথা। আর এসব বৈঠকে থাকবেন বাংলাদেশের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুও।
নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, এবারের সফরে কোনো চুক্তি না হলেও উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অন্যতম এজেন্ডা হবে সহজ শর্তে এলএনজি সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়টি। এছাড়া কাতার ইকোনমিক ফোরামেও বিশেষ আলোচনার বিষয় ‘জ্বালানি নিরাপত্তা’।
সম্প্রতি কাতার যাওয়ার আগে সময় সংবাদকে নসরুল হামিদ বিপু জানান ,‘আরেকটি চুক্তি করার জন্য আমরা বলেছি। আমাদের প্রায় অনেক মাস ধরে কাতারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। কয়েকটি বিষয়ের শর্ত নিয়ে আগের চুক্তির সঙ্গে এ চুক্তির পাথর্ক্য হচ্ছে কাতারের সঙ্গে। সেই শর্তগুলো নিয়ে আমাদের যাচাই-বাছাই চলছে।’
জ্বালানি ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন আন্তর্জাতিক জ্বালানি পরামর্শক প্রকৌশলী সালেক সুফি। তার মতে, বাংলাদেশের অনূকূলে আলোচনা এগিয়ে নিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানিসমৃদ্ধ দেশটিতে প্রধানমন্ত্রীর এ সফর।
সালেক সুফি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশটির আমিরের দেখা হবে। এ টপ লেভেল আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এলএনজির কোটাটা বাড়ানোর একটা বড় সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যদি কাতারের আমিরকে অনুরোধ করেন, আমার মনে হয় তাহলে বরফ গলতেও পারে।’
এছাড়াও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ এ খাতে বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর এ সফর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।