মহানগর ডেস্ক: বায়ুদূষণে ঢাকাসহ বিশ্বের বড় বড় শহরগুলোর অবস্থান প্রতি মুহূর্তেই ওঠানামা করে। রাতে বাড়ে তো সকালে কমে, আবার সকালে বাড়লে দুপুরে কমে।
সেই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৬ জুন) সকাল সোয়া ৯টায় দূষিত শহরের তালিকায় একিউআই স্কোর ১৬৬ নিয়ে শীর্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহর, আর একিউআই স্কোর ১৫৪ নিয়ে ঢাকা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। ঢাকার পরে ১৫১ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে কাতারের দোহা।
আবহাওয়ার মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) এ তথ্য জানিয়েছে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার এ তালিকা প্রকাশ করে। একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-র মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
এদিকে ৩০১ থেকে ৪০০-র মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার সম্প্রতি সময় সংবাদকে বলেন, প্রতিবছরই পূর্ববর্তী দিনের চেয়ে গড়ে ৮ থেকে ১০ ভাগ দূষণ বাড়ছে। কিন্তু এর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মহানগরীতে সবচেয়ে বেশি ৩১ ভাগ বায়ুদূষণ ঘটে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণকাজের কারণে। ফলে কোনো নির্দিষ্ট এলাকাকে বায়ুদূষণের হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না।
তার মতে, যে এলাকায় বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয়, সেখানে বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
আর বায়ুর এমন দূষণের ফলে হার্টের ক্ষতি, ব্রেনের ক্ষতির পাশাপাশি ফুসফুসেরও সমস্যা প্রকট আকারে দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো: ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলা।